দেবহাটা প্রতিনিধি: “বাল্য বিবাহ বন্ধ করি, শিশুদের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ, গড়ি এই স্লোগানকে সামনে রেখে দেবহাটা উপজেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর অর্থায়নে, দেবহাটা এরিয়া প্রোগ্রাম ও সুশীলনের আয়োজনে দেবহাটা ফুটবল মাঠে এ ঘোষণা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিষ্ণুপদ পাল।
বক্তব্য দেন, দেবহাটা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা শরীফ নেওয়াজ, উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকাত ওসমান, দেবহাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ইলিয়াসুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন জাহান, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের ডেপুটি ডিরেক্টর (ফিল্ড অপারেশন) রাজু উইলিয়াম রোজারিও, সুশীলনের পরিচালক মোস্তফা আক্তারুজ্জামান, রামপাল এসিও এর সিনিয়র ম্যানেজার ফুলি সরকার, কুলিয়ে ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রভাস মন্ডল, গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সেক্রেটারি ফিরোজ শাহ আলম, স্থানীয় ইমাম সিরাজুল ইসলাম, যুব ফোরামের তানিয়া সুলতানা, ইয়ুথ ভিজিলেন্ট গ্রুপের আসাদুল ইসলাম প্রমুখ।
দেবহাটা এপির সিডিও মিজানুর রহমান, জ্যোৎস্না বালা ও ইয়ুথ এম্পায়ার প্রজেক্ট অফিসার আবু এমরানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন দেবহাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি মীর খায়রুল আলম, দেবহাটা এরিয়া প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার লাবলু খান, সুশীলনের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মামুন হোসেন, রাইট টু গ্রো প্রজেক্টের ম্যানেজার জগন্ময় প্রজেশ বিশ্বাস, ইয়ুথ এম্পায়ার প্রজেক্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার ইউসুফ আলী, সুশীলনের সিডিও আসাদুজ্জামান রিপন, নিলাদ্রী বিশ্বাস, জেসিডিও পিন্টু মন্ডল, সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারগন, যুব ফোরাম, ইয়ুথ গ্রুপ সহ বিভিন্ন পর্যয়ের সুবিধাভোগীগন।
এ সময় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুসারে ছেলেদের নুন্যতম ২১ বছর এবং মেয়েদের বয়স ১৮ বছর হওয়া বাধ্যতাম‚লক বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু দারিদ্রতা, নিরাপত্তাহীনতা ও সামাজিক কুসংস্কারের কারণে এ আইনের তোয়াক্কা না করে বাল্য বিবাহ হয়ে আসছিল। তাই সরকারের পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও দেবহাটা এরিয়া প্রোগ্রাম, সুশীলন ও উত্তরণের উদ্যোগে ২০২৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কাজ শুরু হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে ৫টি ইউনিয়নে জরিপ করে ১১০০৭ টি পরিবার মনিটরিং, পরিদর্শন ও মেসেজ শেয়ারিং করা হয়। যেখানে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে কিশোরী ৩৩২১ জন এবং কিশোর ৪৩৫৮ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব কিশোর-কিশোরী, অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা, ইয়ুথ ফোরাম, চাইন্ড ফোরাম, ভিডিসি, কাজী ও ইমাম, বিভিন্ন পেশাজীবি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠক করা হয়। বিগত ৬ মাসে ৯ টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করে তাদের স্কুলগামী করা হয়েছে।
এছাড়া ইয়ুথ এম্পায়ার প্রকল্পের মাধ্যমে ৩৬টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ৫টি ইউনিয়নে ৪৫টি ওয়ার্ডে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটি গঠনের মাধ্যেমে এলাকার জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে উঠান বৈঠক, সভা, কর্মশালা, ক্যাম্পেন, পট গান ও নাটক প্রদর্শন সহ বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ।