ডেস্ক নিউজ:: পানির তীব্র তোড়ে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই দিনে ভেঙে গেছে বেত্রবতী নদীর ৩ সেতু। এরমধ্যে একটি বেইলি ব্রিজ ও অপর দুটি কাঠের। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ও সন্ধ্যায় ব্রিজগুলো ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। এতে কলারোয়া উপজেলা সদর ও পৌরসদরের সঙ্গে পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ড ও উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬ ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে কলারোয়ার সঙ্গে যশোরের কেশবপুর, মনিরামপুর ও ঝিকরগাছা উপজেলা, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সঙ্গেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
কলারোয়া পৌরসভার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান জানান, গত বছরের আগস্টে উপজেলা ও পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্র পশুহাট মোড়ের বেত্রাবতী নদীর ওপর পাকা ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হয়। এরপর আট মাস বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের মে মাসে আবার কাজ শুরু হলে পুরোনো ব্রিজটি ভেঙে ফেলে যাতায়াতের বিকল্প হিসেবে পাশে লোহার বেইলি ব্রিজ স্থাপন করা হয়। সেই বিকল্প বেইলি ব্রিজটিই হয়ে পড়ে উপজেলার জালালাবাদ,বাটরা,কয়লাসহ ৬ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩ ওয়ার্ডের মানুষের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম। বৃহস্পতিবার সকালে সেই বিকল্প ব্রিজটি পানির তোড়ে রাস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ।
পৌরসভার কাঁচাবাজার এলাকার বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জানান, পৌর সদরের তরকারি বা কাঁচাবাজার ও মাছ বাজার সংলগ্ন কাঠ ও বাঁশ দিয়ে নির্মিত সাঁকো কিছু দিন আগে ভেঙে যায়। সম্প্রতি সেটা যাতায়াতের উপযোগী করা হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে বেত্রবতী নদীর পানির ব্যাপক তোড়ে কাঠের সাঁকোটি মাঝখান থেকে ভেঙে দুই খণ্ড হয়ে যায়। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সাকো ব্যবহারকারী দু’পাড়ের মানুষের যাতায়াত।
গোপিনাথপুর এলাকার আরিফ মাহমুদ জানান, পৌরসভার গোপিনাথপুর তারকনন্দী নামক স্থানের কাঠের বড় সেতুটির মাঝবরাবর ভেঙে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়েছে।
কলারোয়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, কলারোয়া উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া বেত্রবতী নদীর উভয় পাশে ৬টি করে মোট ১২টি ইউনিয়ন রয়েছে। এতে পূর্ব পাশের ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩টি ওয়ার্ডের সঙ্গে পশ্চিম পাশের কলারোয়া উপজেলা সদর ও পৌর সদরসহ ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৬টি ওয়ার্ডের যোগাযোগ বহুলাংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ফলে উপজেলার ওই ৬ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৩ ওয়ার্ডের মানুষ সহজে আর কলারোয়া উপজেলা সদরে আসতে পারছেন না। তেমনি নদীর এপারের ৬ ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৬টি ওয়ার্ডের মানুষ ওপারে যেতে পারছেন না। এখন নদী পারাপার ও ওই অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগের একমাত্র পথ থাকলো উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে পৌরসভাধীন মুরারীকাটি হাইস্কুলের পাশে অবস্থিত পাকা ব্রিজটি।
পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার কান্তি দাশ বলেন, আমরা কাঠের সেতু দুটো ব্যবহার উপযোগী করার উদ্যোগ নিচ্ছি। এক-দুদিনের মধ্যে কাঠের সেতু দুটো সংস্কার করা হবে।
পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, বেইলি ব্রিজটি সওজের আওতাধীন। বিষয়টি সওজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।