আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
কম উচ্চতার জন্য আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে প্রতিবেশী ও বন্ধুদের কটাক্ষ শুনতে হতো তাকে। সবার মুখ বন্ধ করতে বেছে নিয়েছিলেন পড়াশোনা। সমাজে নিজেকে বিশেষ ভূমিকায় প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে যোগ্য জবাব যে দেওয়া যাবে, মনে মনে সেই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন সফল হয়েছে ভারতের গুজরাটের গণেশ বারাইয়া’র। সব প্রতিকূলতা জয় করে ৩ ফুট উচ্চতার ২৩ বছরের এই যুবক আজ প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক।
গণেশের লড়াইয়ের কাহিনী
২০১৮ সালে ডাক্তারি এনট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি। এমবিবিএস পড়তে গুজরাটের ভাবনগর মেডিকেল কলেজে গিয়েছিলেন গণেশ। কিন্তু উচ্চতা কম হওয়ায় সেসময় তাকে ভর্তির অনুমতি দেয়নি মেডিকেল কাউন্সিল। সংস্থাটির দাবি ছিল, জরুরি ভিত্তিতে রোগীর চিকিৎসা করা গণেশের পক্ষে অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আদালতের দ্বারস্থ গণেশ
কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে মুষড়ে পড়েছিলেন গণেশ বারাইয়া। পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে স্কুলের শিক্ষক ও শুভাকাঙ্খীদের পরামর্শ নিয়েছিলেন তিনি। তারাই তাকে আইনের দ্বারস্থ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। পরে মেডিকেল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গুজরাট হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন গণেশ।
মামলাটি পরে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। কিন্তু তাতেও দমে যাননি অত্যন্ত মেধাবী ও উদ্যমী এই তরুণ। ভারতের শীর্ষ আদালত গণেশের পক্ষে রায় দেন ও শেষমেশ তিনি ভাবনগর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার অনুমতি পান।
দীর্ঘ আইনি পথ পার করে ২০১৯ সালের ১ অগস্ট গুজরাটের ভাবনগর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন গণেশ বারাইয়া। শুরু হয় তার চিকিৎসক হওয়ার লড়াই। সম্প্রতি ফাইনাল পরীক্ষায় ভালো ফল করে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। বর্তমানে গণেশ ভাবনগরের একটি সরকারি হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত।
কী বলছেন মেডিকেল কলেজের ডিন?
শারীরিক প্রতিকূলতা থাকার পরও গণেশ বারাইয়া এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করায় খুশি ভাবনগর মেডিকেল কলেজের ডিন হেমন্ত মেহতা। গণেশের এই ইচ্ছাশক্তি অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে বলে দাবি তার। সেই সঙ্গে, আগামী দিনে গণেশের সাফল্যও কামনা করেছেন হেমন্ত মেহতা।
ভাবনগর মেডিকেল কলেজের ডিন জানিয়েছেন, এমবিবিএস পড়ার সময় প্রায়ই সমস্যার কথা জানাতেন গণেশ। কলেজের পক্ষ থেকে সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছিল। এছাড়া সহপাঠী থেকে শুরু করে শিক্ষকরাও তার দিকে সাহায্যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
সূত্র: এএনআই