নিজস্ব প্রতিবেদক: দেবহাটার চাঁদপুরে অন্যের ক্রয়কৃত জমি দখল করতে না পেরে উল্টো হয়রানি সহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে রুহুল আমিন লিটন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জমির ক্রয়কৃত মালিক কামটা গ্রামের মৃত মাজেদ সরদারের পুত্র মাসুদ রানা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা এবং নিরাপত্তা চেয়ে দেবহাটা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এতে উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের আক্তার গাজীর ছেলে রুহুল আমিন লিটন (৪২), লিটনের স্ত্রী রুপালী খাতুন (৩৫), রামনাথপুর গ্রামের মৃত কাশেম গাজীর ছেলে আক্তার গাজী (৬৫) কে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মাসুদ রানা নামের এক যুবক কামটা গ্রামের মোক্তার আলী গাজী, হাসান আলী গাজী এবং আরশাফ আলী গাজীর নিকট থেকে ৬২৯ নং দলিল মূলে রামনাথপুর মৌজায় ৪১.২৫ শতক জমি ক্রয় করেন। যার খতিয়ান নং-৩২৬৯, দাগ নং-৫০৪ ও ৫০৫ নং দাগে উক্ত জমি ক্রয় করার পর থেকে তিনি নিজে ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু ওই জমির দক্ষিণ পাশে বসবাসকারী কামটা গ্রামের আক্তার গাজীর ছেলে রুহুল আমিন লিটন দীর্ঘদিন ধরে ওই জমি দখলের চেষ্টা করে আসছেন। তিনি ওই জমি দখলে নিতে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি বিষয়টি নিয়ে বহুবার গ্রাম্য শালিশ ও প্রশাসনিক ভাবে বসাবাসি হয়। এরপরেও একের পর এক ঝামেলা করতে থাকে লিটন ও তার পরিবার। কয়েকদিন পূর্বে ওই জমিতে মাপ জরিপ ও সীমানা নির্ধারণ করতে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে এসে হামলার চেষ্টা করে লিটন।
এ বিষয়ে ক্রয়সুত্রে মালিক মাসুদ রানা জানান, কিছুদিন পূর্বে আমার ক্রয়কৃত ওই জমিতে যাওয়ার জন্য সরকারি রাস্তার পাশে খাস জমির উপর দিয়ে চলাচলের রাস্তা নির্মান করতে গেলে নানা ভাবে হয়রানি শুরু করে লিটন। আমি সরকারি জমি বাদ রেখে ক্রয়কৃত জমিতে সীমানা প্রাচীর করার জন্য প্রস্তুতি নিলে বাধাগ্রস্থ করে আমার কাছে ১০ লাখ টাকার চাঁদার দাবি করে লিটন। আমি টাকা না দিলে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটানো সহ বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে। আমি তার কথায় ভীত না হয়ে নিজ জমিতে গেলে ২০২৪ সালের ২৩ জুলাই তারিখে সে নাটক সাজিয়ে দেবহাটা থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। পাশাপাশি রান্না ঘরে নিজেরা আগুন দিয়ে আমাদের উপর দোষারোপ করে। আমি নিজে গিয়ে তাদের দেওয়া আগুন নিভিয়ে দেই। যার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে ইতোপূর্বে থানা সহ বিভিন্ন স্থানে সালিশ হয়েছে। সেখানে লিটন সুষ্ঠ সমাধান মেনে নিলেও পরবর্তীতে আমাকে বিপদে ফেলতে একের পর এক নাটক সৃষ্টি করে হয়রানি করছে। আমি যাতে ক্রয়কৃত জমি দখল না রাখতে পারি সে জন্য এমন চক্রান্ত করছে সে।
আরো বলেন, লিটন নিজে ভূমি দস্যু হয়ে খলিশাখালিতে জমি দখল, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া দিন দুপুরে মানুষের বসতবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করতে গিয়ে গত ১৬ মে তারিখে দেবহাটা থানায় ১০/৪২ নং মামলার আসামী সে। ওই মামলায় সে জেলে যায়, পরে জামিনে বাড়িতে এসে আমাকে হয়রানি করে চলেছে। এ ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে দীর্ঘদিন। তার পিতা একজন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কাউন্সিলার। সে বার বার শালিসে বসে মিমাংশা মেনে নিলেও পরে আবার তা অমান্য করে। আমি তার হয়রানি থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হযরত আলী জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে উভয় পক্ষকে ডেকে শান্তিপূর্ণ ভাবে মিংমাসা করার হবে।