তালা প্রতিনিধি:তালা উপজেলার গোনালী খৈতলা মোড়ে খুলনা-পাইকগাছা সড়কের নিচ দিয়ে পানি সরানোর সরকারি কালভার্ট সংলগ্নে গভীর খাদ তৈরি করে মাটি ও বালি উত্তোলন করা হয়েছে। একই সময়ে খৈতলা মোড় থেকে কপোতাক্ষ নদ অভিমুখের কাচা সড়কের পাশ থেকে গভীর খাদ করে মাটি কাটা হয়। এরফলে ইতোমধ্যে খাদের চারিপাশে মাটি ভাঙ্গন শুরু হয়েছে এবং প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি কালভার্টটি ধ্বসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। কালভার্টটি ধ্বসে পড়লে খুলনা-পাইকগাছা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। স্থানীয় নলতা গ্রামের শাহিন শেখ ওই ২টি স্থান থেকে মাটি খনন সহ বালি উত্তোলন করে। শাহীন শেখ যশোর সদর থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত থাকায় তিনি গ্রামবাসীকে গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন এলাকার মানুষ। এঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ তালা থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উপজেলার নলতা গ্রামের ইকবাল শেখ, সাবেক ইউপি সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান ও স্থানীয় জমি মালিক মোজাম শেখ জানান, নলতা গ্রামের মৃত. মিয়াজান শেখ’র ছেলে শাহিন শেখ খৈতলা মোড়ের খুলনা-পাইকগাছা সড়কের কালভার্টের পাশ থেকে এবং খৈতলা থেকে কপোতাক্ষ নদ অভিমুখের কাচা রাস্তার পাশে পুকুর খনন করে মাটি কাটার চেষ্টা চালাচ্ছিল। কিন্তু এই দুটি স্থান থেকে মাটি কাটা সহ বালি উত্তোলন করা হলে রাস্তা এবং কালভার্ট ধ্বসে ব্যপক ক্ষতি হবে বলে গ্রামবাসী তাতে বাঁধা দেয়।
গ্রামবাসী জানান, এলাকার মানুষ বাঁধা দিতে পারে বিধায় শাহীন শেখ গত ২৯ ডিসেম্বর রাত ৪টার দিকে পাশ^বর্তী ইকবলের ইট ভাটা থেকে স্কেভেটর মেশিন ভাড়া করে এনে রাতের আঁধারে দ্রুত দু’টি স্থান থেকে মাটি কাটা সহ বালি উত্তোলন করে। এইসময়ে গ্রামের পানি সারানোর খাল ভরাট করে খালের জমি দখল করে সেখানে মাটি ও বালি ভরাট করে। ভরাট করা বিলের জমিতে বাড়ি নির্মানের কাজ চালাচ্ছে শাহিন শেখ। এদিকে, গভীর খাদ তৈরি করে মাটি কেটে বালি উত্তোলন করায় ঘটনার পরপরই কোহিনুর শেখ’র বোরো ধানের বীজতলার জমি ভেঙ্গে খাদের মাঝে পড়ে। এরআগে গ্রামবাসীর মৌখিক অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মো. রাসেল’র নির্দেশে খলিলনগর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে কালভার্টের সামনের মাটি খনন কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু ভূমি কর্মকর্তার সেই বন্ধের আদেশ অমান্য করে পুলিশে চাকরীর ক্ষমতাবলে শাহীন শেখ রাতের আঁধারে মাটি কেটে ও বালি উত্তোলন করে খুলনা-পাইকগাছা সড়কের কালভার্ট এবং একটি জনগুরুত্বপূর্ন কাচা রাস্তা হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছি। একইসাথে সরকারি খাল দখল করায় পানি নিস্কাসন বন্ধ হয়ে এলাকা প্লাবিত হবে বলে সেখানকার অপর জমি মালিক মোজাম শেখ অভিযোগ করেছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে শাহিন শেখ জানান, কালভার্টের সামনে পানি সরানোর খাল রাখার জন্য মাটি খনন করা হয়েছে। অপরদিকে কাচা রাস্তার পাশে সরকারি খাল রেখে নিজস্ব জমি মাটি ভরাট করে উঁচু করা হয়েছে। তবে, খুলনা-পাইকগাছা সড়কের কালভার্ট ভেঙ্গে পড়ার আশংকার ব্যপক জনক্ষোভ তৈরি হলে শাহীন শেখ উত্ত্বোলন করা বালির কিছু অংশ ওই খাদে ফেলে খাদের গভীরতা কমিয়েছে বলে গ্রামবাসী জানান।