বি. এম. জুলফিকার রায়হান, তালা: তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের জলাবদ্ধতার কারনে বোরোচাষ নিয়ে চাষীরা আতংকিত রয়েছে। এলাকার বৃষ্টির পানির সাথে পাশ^বর্তী কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলা থেকে নেমে আসা পানিতে তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের হাজার হাজার একর কৃষি জমি এখনও পানির নিচে। পানি নিস্কাশন না হওয়ায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ইতোমধ্যে শত কোটি টাকার কৃষি ও মৎস্যখাতে ক্ষতি হয়েছে। আসন্ন বোরো আবাদ না হলে ক্ষতির মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং খাদ্য সংকট সহ আর্থিক সংকটে জন-মানুষের বিপর্যয় আসবে। জনগনরে দীর্ঘদিনের দাবী জলাবদ্ধতার পানি সরিয়ে বিলগুলো কৃষি চাষের আওতায় আনা।
জলাবদ্ধতা নিরসনে উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন খাল থেকে নেট-পাটা অপসারন সহ বিকল্প পথে পানি সরানোর জন্য নালা তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু কতিপয় ঘের ব্যবসায়ী এবং অসাধু মাছ শিকারীরা খালের মুখে বারবার নেট ও পাটা সহ মাছ ধরার নানান উপকর বসিয়ে পানি নিস্কাশন বন্ধ করে দিচ্ছে। এরফলে পানি ৩মাস ধরে জমে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে এবং মানুষ পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অমানবিক জীবন-যাপন করছে। সৃষ্ট জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান করে বিলগুলো কৃষি চাষের আওতায় আনার লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আবারও অভিযান চালানো হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল আমীন এর নেতৃত্বে সোমবার (১১ নভেম্বর) সকাল থেকে জলাবদ্ধতায় কবলিত তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ সহ তালা থানা পুলিশ, ভূমি অফিসের নাজির কাম ভ্রাম্যমান আদালত সহকারী খাঁন মো. নুরুল আমিন এবং স্থানীয় বিএনপিও ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ সহ জলাবদ্ধতায় ভুক্তভোগী শতাধিক মানুষ অংশনেন।
এবিষয়ে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, এলাকার বৃষ্টির পানি সাথে কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলা থেকে নেমে আসা পানিতে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম ও বিল জলাবদ্ধ রয়েছে। প্রায় ৩ মাসের জলাবদ্ধতায় কোটি-কোটি টাকার কৃষি ও মৎস্যখাতের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধ এলাকায় বসবাস করার কারনে মানুষ পানি বাহিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, বোরো মৌসুম আগত। বিলগুলো এখনই জলাবদ্ধমুক্ত করা না গেলে কৃষকরা অধিক ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এমতাবস্থায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আব্দুল্লাহ আল আমীন’র নেতৃত্বে সোমবার সকাল থেকে নওয়াপাড়া খাল ও লক্ষনপুর বিল ও শিরাশুনি বিল সহ আশপাশের বিলে অভিযান চালানো হয়। এসময় পানি নিস্কাশনের জন্য প্রয়াজনীয় খালগুলো থেকে নেট-পাটা অপসারন, কালভার্ট ও স্লুইস গেটগুলোর মুখ থেকে মাটি সহ নেট-পাটা অপসারন করা হয়। এরফলে জলাবদ্ধতার পানি নওয়াপাড়া খাল হয়ে গোপালপুর খালের মাধ্যমে কপোতাক্ষ নদীতে দ্রুত নিস্কাশন হবে এবং কৃষকদের বোরো আবাদ সুযোগ হবে।