মনির হোসেন, বেনাপোল: বেনাপোল কাস্টম হাউসকে জাতীয় রাজস্ববোর্ডে চলতি ২০২৪-২৫অর্থবছরে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল ৬ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। বছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৫৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সেখানে আদায় হয়েছে এক হাজার ৩০৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম রাজস্ব আদায় করা হয়েছে ২৩৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এসময় পণ্য আমদানি হয়েছে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৬১৫ মেট্রিক টন। আর রফতানি করা হয়েছে ৯ হাজার ৬৪৯ মেট্রিক টন।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আন্তর্জার্তিক বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহামুদ বিপুল জানান, বৈশ্বিক মন্দা, ডলারের দাম ঊর্ধ্বগতি আর সংকটের কারণ দেখিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কয়েক বছর ধরে এলসির সংখ্যা কমিয়েছেন। বর্তমানে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী পণ্য আমদানি কমিয়েছেন। তারা দেশের পরিস্থিতি দেখছেন। আশা করা যাচ্ছে সামনের মাসগুলোতে আমদানি রফতানি কাযক্রম স্বাভাবিক গতি পাবে।
যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানান, সরকার পরিবর্তনে ব্যবসা বাণিজ্য কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দেশের পরিস্থিতি কোথায় যায় সেটি দেখছেন। আবার ডলারের উচ্চমূল্যও একটি বড় ব্যাপার। তবে আশা করা যাচ্ছে সামনের মাসগুলোতে বাণিজ্য গতি পাবে।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, গেল আগষ্ট মাসে সরকার পরিবর্তনের পর দেশের পরিস্থিতি কিভাবে চলবে তা পর্যবেক্ষন করছেন ব্যবসায়ীরা। অনুকূল পরিবেশ থাকলে সামনে বাণিজ্য গতি ফিরে আসবে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১৪ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে পণ্য আমদানি হয়েছিল ২১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিক টন। এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি করা হয়েছিল ২৬ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। ২০১৯-২১ অর্থবছরে পন্য আমদানি করা হয়েছিল ২০ লাখ ৩৮ হাজার ৬৪ মেট্রিক টন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পণ্য আমদানি করা হয় ২০ লাখ ১১ হাজার ৬ মেট্রিক টন পণ্য।
ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট ইমপোর্ট এক্সপোর্ট কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, দেশে জুলাই-আগষ্ট মাসে আন্দোলন চলায় ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছিলেন। তবে সামনে আমদানি রফতানি বাড়বে। তখন রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।
বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার সাফায়েত হোসেন জানান, গেল জুলাই- আগস্ট মাসে দেশে আন্দোলন চলার কারণে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি থেকে বিরত থেকেছেন। এখন ডলারের পরিস্থিতিও স্থিতিশীল। আশা করা যাচ্ছে সামনের মাসগুলোতে ব্যবসায়ীরা পুরোদমে বাণিজ্য কার্যক্রম শুরু করবেন। তখন আমাদের রাজস্ব আদায়ও বেড়ে যাবে।